বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

এশিয়ায় সামরিক আধিপত্য : চীনের কাছে হেরে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!

এশিয়ায় সামরিক আধিপত্য : চীনের কাছে হেরে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!

স্বদেশ ডেস্ক:

চীনের সামরিক খাতে যে আধুনিকায়ন চলছিল, সেই প্রেক্ষাপটে দেশটিকে দীর্ঘদিন ধরে একটি ‘উঠতি শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু এই বিশ্লেষণ মনে হয় তামাদি হয়ে গেছে। চীন এখন আর উঠতি শক্তি নেই, তারা মারাত্মক শক্তিতে বা সুপারপাওয়ারে পরিণত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করছে।

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির যুক্তরাষ্ট্র স্টাডিজ সেন্টারে নতুন একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কৌশল ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নজিরবিহীন সংকটে রয়েছে। ওয়াশিংটনকে হয়তবা তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে রক্ষা করার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।

তারা বলছেন “আমেরিকা সামরিক শক্তির দিকে থেকে ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আর একাধিপত্য উপভোগ করতে পারছে না” এবং “দেশটির নিজেদের সপক্ষে ক্ষমতার একটা ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে”।

রিপোর্টে বলা হচ্ছে বেইজিংয়ের দারুণ সব ক্ষেপণাস্ত্রের যে সম্ভার রয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি এবং তার বন্ধু দেশগুলোর জন্য হুমকি।

চীন যুক্তরাষ্ট্রের মত বৈশ্বিক সুপারপাওয়ার না। কিন্তু তারা যে সেরকম একটা উচ্চাভিলাষ নিয়ে আগাচ্ছে না সেটাও বলা যাবে না। এরই মধ্যে তারা বিদেশে নিজেদের বন্দর এবং ঘাঁটির একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে চীনের অবস্থান মূলত তার অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে।

চীনের যে জিনিসটির অভাব রয়েছে সেটা হল দেশের বাইরে অর্থাৎ যেটাকে ‘ওভারসিজ মিশন’ বলে। পুরো বিংশ শতাব্দী ধরে দেখা গেছে এই ওভারসিজ মিশনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে দাপিয়ে বেড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্বে এগিয়ে আছে। যেমন: গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান।

এশিয়া এবং নেটোর মাধ্যমে ‌ইউরোপে গভীর নেটওয়ার্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনের আবার এই ধরণের জোট ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ওয়াশিংটনের প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্বকে দ্রুত দুর্বল করছে চীন।

চীনের কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল এশিয়া এবং নিজেদের আশপাশে শক্তিবৃদ্ধি। এখানে দুটি মূল বিষয়- লক্ষ এবং তার নাগাল পাওয়া।

তার অর্থ এশিয়াতে চীন ইতিমধ্যে একটা সুপার-পাওয়ার হয়ে উঠেছে যেটার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে।

চীন যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা এবং যুদ্ধের লড়াই নিয়ে গবেষণা করেছে এবং তারা একটা কার্যকর কৌশল তৈরি করেছে।

সংকটের সময় চীনের লক্ষ্য হল ‘ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইন’ এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা। ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইন হল দক্ষিণ চীন সাগর বরাবর একগুচ্ছ দ্বীপ। মানচিত্রে দেখলে, এই দ্বীপের সারি শুরু হয়েছে জাপানের তলা থেকে যা তাইওয়ানকে পার হয়ে ফিলিপাইনের পশ্চিম দিকটাকে অতিক্রম করেছে।

কিন্তু চীন ‘সেকেন্ড আইল্যান্ড চেইন’ এর বাইরেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চায়। সেকেন্ড আইল্যন্ড চেইনটি সাগরের আরো দূরবর্তী অংশের দ্বীপপুঞ্জের একটি সারি যার মধ্যে গুয়াম দ্বীপও রয়েছে। এই গুয়াম দ্বীপে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। চীন তাদের অস্ত্র ব্যাবহার করে এই গুয়ামকেও ঠেকাতে চায়।

তবে এটা ভাবার কারণ নেই পেন্টাগন চীনের এসব চিন্তা সম্পর্কে অবগত না।

দশকের পর দশক ধরে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ চালানোর মধ্যে দিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনী পুনর্গঠিত হয়ে গেছে। তারা নতুনভাবে অস্ত্রসজ্জিত হয়েছে এবং এই সাথে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুতও হয়ে গেছে।

স্নায়ু যুদ্ধের যে সামরিক বাহিনীটির লক্ষ্য ছিল মোটা দাগে শুধুমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, আজ সেই বাহিনীটিই প্রস্তুতি নিচ্ছে চীনকে লক্ষ্য করে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877